পাখিকে হ্যাণ্ডফিডিং করানোর নিয়ম! ছবি সহ
যারা পাখি পালন করেন, তাদের প্রত্যেকের একটি সাধারন কাজ হল হ্যান্ডফিডিং বা বাচ্চাকে হাতে খাওয়ানো। বিভিন্ন কারনে হ্যান্ডফিডিং করানোর প্রয়োজন হয়। আর সঠিক কারন না জানার কারনে অনেক সময় বাচ্চা মারা যায়। আর এই বাচ্চা মারা যাওয়ার প্রধান কারন হল সঠিক নিয়ম না জানা।
আজকে আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
হ্যান্ড ফিডিং এর বিভিন্ন পদ্ধতি আছে তার মধ্যে চারটি উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি এখানে আলোচনা করা হলঃ
১. নিজের হাতের সাহায্যে খাওয়ানোঃ এই পদ্ধতি সবচেয়ে নিরাপদ। খাবার নরম করে গোলাকার বা দানাদার করে মুখের সামনে ধরলে নিজে নিজে খেতে পারে। এতে পাখির অভ্যন্তরিণ কোনো ক্ষতি (internal injured) হয় না। (চিত্র -০১)।
২. চামচ (Spoon)ঃ এই পদ্ধতিটিও নিরাপদ কারন অভ্যন্তরিন ক্ষতির সম্ভবনা থাকে না। পাখির সামনে চামুচ ধরলে নিজে নিজ খেয়ে নেয়। তবে পাখিকে অভ্যাস করাতে বেশ কষ্ট করতে হয়। (চিত্র -০২)।
৩. ড্রপার(Dropper)ঃ ড্রপার পখির মুখে খুব বেশি প্রবেশ না করিয়ে খাওয়াতে হয়। এটা মোটামুটি নিরাপদ পদ্ধতি। তবে অনভিজ্ঞতার জন্য কখনও কখনও বিপদ ডেকে আনতে পারে বা অভ্যন্তরীণ ক্ষতি হতে পারে (চিত্র -০৩)।
৪. সিরিঞ্জ(Syringe) ঃ এটা সবচেয়ে পরিচিত ও জনপ্রিয় পদ্ধতি। সিরিঞ্জ আর রবারের নলের সাহায্যে পাখির মুখের ভিতর খাবার প্রবেশ করাতে হয়। তাই পাখির জন্য বড় ধরনের বিপদও ডেকে আনতে পারে। এই পদ্ধতিতে অভ্যন্তরীণ ক্ষতির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে নতুনদের জন্য। এই পদ্ধতি অবলম্বন করার আগে পাখির শরীরবৃত্তীয় (Anatomy) সম্পর্কে ধারনা নেওয়া দরকার। অন্তত অভিজ্ঞ ব্যাক্তির সাহায্য নেওয়া উচিত। (চিত্র -৪ ও ৫)।
এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করার আগে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
* সুস্থ বাচ্চার লক্ষন খাবরের জন্য বা খিদা লাগলে মুখ হা করে ডাকতে থাকে খাবারের জন্য।
* প্রতিবার হ্যান্ড ফিডিং এর সময় ফ্রেশ খাবার নিতে হবে।
* খাবার যেন নরম ও খুবই হালকা গরম থাকে।
* পাখিকে খাওয়ানোর আগে নিজের হাত ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
* চামচ/ড্রপার /সিরিঞ্জ প্রতিবার খাওয়ানোর পূর্বে গরম পানি দিয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
* বয়স অনুযায়ী খাবারের পরিমান ও খাওয়ানো সময় জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে এর তালিকা দেওয়া হল।
বাচ্চার বয়স | খাওয়ানোর সময় | খাবারের পরিমান |
১-৪ দিন | প্রতি ২ ঘন্টা পর পর | ১-২ সিসি |
৫-৭ দিন | প্রতি ৩ ঘন্টা পর পর | ২-৩ সিসি |
৮-১৪ দিন |
৭টা, ১১টা, ৩টা, ৭টা, রাত ১১টা |
৪-৬ সিসি |
১৫-২৪ দিন | ৭টা, ১২টা, ৫টা, রাত ১১টা | ৭-১০ সিসি |
২৫-৩৪ দিন | ৭টা, ৫টা, রাত ১১টা | ১১-১৫ সিসি |
৩৫-৪৪ দিন | সকালে আর সন্ধ্যায় | ১১-১৫ সিসি |
৪৫ দিনের বেশি | সন্ধ্যায় (তখন খাওয়া শিখবে) |
১১-১৫ সিসি |
ছবি ও লেখা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
এছাড়াও পড়তে পারেনঃ
বাচ্চা পাখির জন্য হ্যান্ডফিড বানানোর পদ্ধতি
পাখির গ্রীন পুপস বা সবুজ পায়খানা
বাড়িতেই বানিয়ে নিন পাখির প্রিয় খাবার সফটফুড
পাখি হঠাৎ (স্ট্রোক) করে কেন মারা যায়?
পাখি পালন করতে হলে যেসব বিষয়গুলো জানা অত্যান্ত জরুরী