পাখির কক্সিডিওসিস: রক্ত বা ইটের গুড়ার রঙের পায়খানা
পাখির কক্সিডিওসিস (coccidiosis) পরিপাকতন্ত্রের একটি রোগ। বিশাল হাতী থেকে শুরু করে বেডরুমের টিকটিকি পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়।
কারন:
কক্সি হয় Eimeria নামক প্রোটোজোয়া দ্বারা। Eimeria’রা অনেক ভাই। E.tenella, E.brunetti, E.maxima, E.necatrix, E.acervulina, এইরকম শত শত আছে। এই জীবাণুগুলার বৈশিষ্ট্য হল এরা host specific এবং organ specific – মানে হইল এক প্রাণীর কক্সি অন্য প্রাণীর কিছুই করতে পারে না। এবং যেইটা যে অর্গানের জন্য নির্দিষ্ট কেবল সে অর্গানেরই ক্ষতি করে।
রোগ তৈরীর প্রক্রিয়া :
এই Eimeria’র সব প্রজাতি আমাদের চারপাশেই অজস্র সংখ্যায় আছে। প্রাণীরা যখন এগুলো অল্প সংখ্যায় খেয়ে ফেলে তখন এই রোগের বিরুদ্ধে vaccine এর কাজ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী হয়। কিন্তু যদি বেশী সংখ্যায় খেয়ে ফেলে তাহলে পেটে গিয়ে বংশবৃদ্ধি করে এবং Eimeria পায়খানার মাধ্যমে বেরিয়ে আসে।এই পর্যন্ত কোন লক্ষণ প্রকাশিত হয় না।কিন্তু পাখি যদি এই Eimeria আবারো খায় তবে পেটের অবস্থা বারোটা বেজে যায়। পেটে অজস্র ক্ষত তৈরী হয়। খাবার হজম হয় না, পায়খানায় রক্ত বা ইটের গুড়ার রঙের পায়খানা হয়। রুচি নষ্ট হয়ে যায়। পাখি শুকিয়ে যায়।এই ক্ষতস্থান দিয়ে আরো জীবানু প্রবেশ করে অবস্থা জটিল করে তুলে।কক্সি আক্রান্ত পাখির বাচ্চাদেরও কক্সি হতে পারে। কিন্তু ডিমের মাধ্যমে বাচ্চায় ছড়ায় না।
প্রতিকার:
এই রোগটি হলে একজন ভেটেরিনারি চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন। তবে সাথে অন্য রোগ থাকলে তারও চিকিৎসা করতে হবে। বিশেষ করে কক্সি হলে Necrotic Enteritis হবার সম্ভাবনা অনেকগুন বেড়ে যায়। রোগ দুটির লক্ষণ একইরকম কিন্তু কারণ আলাদা।
প্রতিরোধ:
পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, তুতে ১ গ্রাম ১ লিটার পানিতে দিয়ে খাচা, ট্রে স্প্রে করা। লবণ পানি স্প্রে করলেও ভালো, কিন্তু তাতে খাচার তার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
লিখেছেন: সূজাতা আফরিন
No Comments