পাখির নীরব ঘাতক কি এবং তার প্রতিকার!
সকালের ভালো পাখি সন্ধ্যায় হুট করে মরে গেলে আমরা অনায়াসে হিট স্ট্রোক মেনে নিচ্ছি! কেউ কেউ লজিক খোঁজে, তবে লাভ হয়না। একসময় হাল ছেড়ে দেয়। কি করবে? কে জানাবে তার শখের পাখির আকস্মিক মৃত্যুর কারণ? আর তাই- মেল (পুরুষ) পাখির জন্য নতুন ফিমেল (মাদি) বা ফিমেলের জন্য নতুন মেল জোগাড়ে মনোনিবেশ করে।
পাখির কিছু নীরব ঘাতক সম্পর্কে সচেতনতা:
১) টেফলন বিষক্রিয়া:
রান্নায় যে নন স্টিকি বাসন ব্যবহার হয়, তাতে Teflon নামক এক উপাদান থাকে। ৫ মিনিট গরম হলেই তা থেকে বিষাক্ত গ্যাস বের হতে থাকে যা কিনা মানুষের মধ্যে “flu-like polymer fever” ছড়াচ্ছে যা পাখির জন্য অসহনীয় বিষক্রিয়া (toxic) তৈরি করে। সুতরাং রান্নাঘরের ধোঁয়া থেকে দূরে রাখুন পাখি।
২) অ্যালুমিনিয়াম বিষক্রিয়া:
অ্যালুমিনিয়াম পাত্রে খাবার রান্না/পাখির খাবার গরম করে দ্রুত তা স্টিলের পাত্রে সরিয়ে ফেলুন, খাবার যত অ্যালুমিনিয়াম পাত্রে থাকবে খাবারে তত অ্যালুমিনিয়াম মিশবে। যা যেকোন প্রাণির জন্য ক্ষতিকর।
২) প্লাস্টিকের পাত্রে গরম খাবার:
গরম পানি বা যেকোন খাবার প্লাস্টিকের পাত্রে রাখলে তা মানুষের জন্যই ক্যান্সারের সবচে’ সহজতর উপায়। তাই পাখির গরম খাদ্য পানি প্লাস্টিকের পাত্রে রাখবেন না।
৩) বিষাক্ত লিকুইড সাবান/বার সাবান ( Toxic cleaning products) :
ডিস ওয়াসিং সাবান দিয়ে পরিষ্কার করার পরে পাখির খাবারের পট সময় নিয়ে, ফোর্সে পানি দিয়ে ভাল করে পরিষ্কার কাপড়ে কচলে নিন। এসব সাবান এমোনিয়া বেইসড এবং ব্লিচিং উপাদান দিয়ে তৈরি হয় যা এককথায় বিষ।
৪) এরোসল স্প্রে :
ACI এরোসল এবং HIT এর মত পোকা/মশা দমনকারী স্প্রে ব্যবহার করেন, অবশ্যই বারান্দার খাঁচা ১৫/২০ মিনিটের জন্য ঢেকে রেখে আসবেন। বাতাসে মুহূর্তে ছড়িয়ে পাখির ফুসফুসে চলে যেতে পারে।
৫) ধাতব বিষক্রিয়া:
তৈরি খাঁচা গ্যালভানাইজ করা তারের হয়ে থাকলে যদি কামড়ে খেতে দেখেন তাহলে পাখিকে নিরুৎসাহিত করুন। পাখিকে নাট-বল্টু, গ্যালভানাইজ করা চেইন ইত্যাদি কামড়াতে দেবেন না।
৬) Aspergillosis সহজ ভাষায় এক প্রকার প্রাণঘাতী ফাঙ্গাল ইনফেকশন :
পরিষ্কার এবং ভালমানের সিড, শাক-সবজি ফল ভাল করে পরিষ্কার করে খেতে দিন।
৭) Avian Goiter বা Thyroid Hyperplasia বা Dysplasia :
কবুতর, ক্যানারি এবং বাজরি পাখির বেশী হয়। খাদ্যে আয়োডিন ঘাটতি হলে এদের থাইরয়েড গ্রন্থি কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
৮) Avian Tuberculosis বা পাখির যক্ষা :
ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন, সুস্থ পাখি নিয়মিত খাবে কিন্তু ওজন কমে যাবে। কিছুটা ডিপ্রেশন থাকবে, পানি খাবে বেশী (মনে হবে গরমে অস্থির) এটির চিকিৎসা প্রায় অসম্ভব! ৯৯.৯% ভাগ পাখি মারা যায়।
এসব রোগ বা বিষক্রিয়াগুলো আপনি কখনোই জানতে পারবেন না পাখির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য দেখে, আপনাকে শুধুই সতর্ক এবং সাবধান হতে হবে।
লিখেছেনঃ নাঈম রহমান
No Comments